অস্ট্রেলিয়ায় পালিত হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শোক দিবস

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শোক দিবস উপলক্ষে অস্ট্রেলিয়ায় এক স্মরণসভার আয়োজন করা হয়। শনিবার (১৮ অক্টোবর) অস্ট্রেলিয়ার সিডনিস্থ ওয়েন্টওয়ার্থভিলের একটি কমিউনিটি হলে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জগন্নাথ হল অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন অস্ট্রেলিয়া।

১৯৮৫ সালের ১৫ অক্টোবর রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) জগন্নাথ হলের টিভি রুমের ছাদ ধসে ৩৯ জন শিক্ষার্থী, কর্মচারী ও অতিথির মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। তাছাড়া অসংখ্য শিক্ষার্থী মারাত্মকভাবে আহত হয়। এরপর থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ দিনটিকে ঢাবি শোক দিবস হিসেবে ঘোষণা করে।

অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রদীপ প্রজ্বলনের মাধ্যমে নিহতদের স্মরণ করা হয়। প্রদীপ প্রজ্বলন করেন জগন্নাথ হল অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন অস্ট্রেলিয়ার প্রবীণ সদস্যরা। পরে নিহতদের আত্মার শান্তি কামনা করে সবাই এক মিনিট নীরবতা পালন করেন। এরপর ভক্তিগীতি ও কোরাস গেয়ে ওই ঘটনার তাৎপর্য ফুঁটিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয়।

অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন এবং ব্রিজবেন থেকে অ্যালামনাইয়ের সদস্য/পরিবারের সদস্যরা অনুষ্ঠানের বিভিন্ন পর্যায়ে দুটি সংগীত পরিবেশন করেন অনলাইনের মাধ্যমে। আর সিডনি থেকে জ্যোতি বিশ্বাস, অদিতি রাউত, তপন শীল গান পরিবেশন করেন। আর আবৃত্তি করেন তুষার রায়, ড. সজল রায় এবং ড. লাবণ্য শিল্পী।

অনুষ্ঠানের সূচনা বক্তব‍্যে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কমল জোয়াদ্দারের বক্তব্য দেন সুবল চৌধুরি। ঢাবি শোক দিবসের ইতিহাস ও কার্যকারণ নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে কয়েকটি বিষয়ের ওপর জোর দেন। সেগুলো হলো- জগন্নাথ হলের ভবন ধ্বসের পরবর্তীতে আহতদের সাহায্যে এগিয়ে আসা সর্বস্তরের মানুষের সহ-মানবতার প্রকাশ, দুর্ঘটনা পরবর্তী তদন্তের রিপোর্ট অদ্যাবধি জনসমক্ষে প্রকাশ না করায় ক্ষোভ প্রকাশ এবং অনতি-বিলম্বে সে রিপোর্ট প্রকাশ ও সেই রিপোর্ট অনুযায়ী এই দুর্ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তি বা অপরাধীদের শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা, নিহত ও আহতদের নিজস্ব ও পরিবারের বর্তমান পরিস্থিতি জানা ও প্রয়োজনীয় সাহায্যের উদ্যোগ নেওয়া।

ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন অস্ট্রেলিয়ার সভাপতি কামরুল মান্নান আকাশ বলেন, তিনি সেই রাতে হাজির হয়েছিলেন জগন্নাথ হলে এবং যথা সম্ভব সহযোগিতা করেছিলেন।

এছাড়া বক্তব্য দেন বুয়েট আহসান উল্লাহ হল অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন অস্ট্রেলিয়ার প্রতিনিধি উত্তম দত্ত, বাংলাদেশ মেডিক্যাল সোসাইটি অস্ট্রেলিয়ার প্রতিনিধি এবং ওই ঘটনায় নিহত শিক্ষার্থী নীরঞ্জন পালের ভাই মনোরঞ্জন পাল। তাদের সবাই ওই ঘটনায় খুবই আবেগপ্রবণ হয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

নিকেশ নাগের সভাপতিত্বে এবং কবিতা রায়ের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানটি প্রাণবন্ত ও নস্টালজিক হয়ে ওঠে। সংগঠনের সদস্য ও তাদের পরিবার এবং অনুষ্ঠানে উপস্থিত আমন্ত্রিত অতিথিরা অনুষ্ঠানটিকে পূর্ণতা দান করেন।

শতদল তালুকদার, সিডনি থেকে

https://www.jagonews24.com/m/probash/article/1060722